কোলাজেন পাউডার কি?
কোলাজেন পাউডার (Collagen Peptides) হলো এক প্রকার প্রোটিন অণু, যা শরীরের দীর্ঘ চেইন অ্যামিনো এসিডস থেকে সর্বাধিক মাত্রায় তৈরি হয়। যেই অ্যামিনো এসিডসগুলো Glycine, Arginine, Proline, Hydroxyproline এর সুংমিশ্রণে গঠিত হয়। এই কোলাজেন প্রাকৃতিকভাবে হাড় ও সংযোগকারী টিস্যুগুলিতে বেশি পাওয়া যায়।
এবং এর প্রসারিত হওয়া রোধ করার দৃঢ় শক্তির কারণে, এটি ত্বকের লাভন্য ধরে রাখতে, বয়সের চিহ্ন মুছে দিতে, টিস্যু থেকে নতুন হাড় তৈরী করতে, হাড় এবং লিগামেন্টের (দুটি হাড়ের সংযোগ স্থলের টিস্যুর) স্বাস্থ্য উন্নতি করতে প্রধান ভূমিকা রাখে। এই কোলাজেন পাউডার বা প্রাকৃতিক কোলাজেন আমাদের শরীরের ৩০ শতাংশ প্রোটিন তৈরি করে। এবং ত্বকের প্রোটিনের ৭০ শতাংশ প্রোটিন তৈরি করে। তথ্যসূত্রঃ
ঘরে বসে নিজেই তৈরি করে ফেলুন কোলাজেন পাউডার খুব সহজে
আমাদের দেয়া রেসিপির পদক্ষেপগুলি স্টেপ বাই স্টেপ অনুসরণ করে, এখন আপনি নিজেই ঘরে বসে তৈরি করতে পারবেন কোলাজেন পাউডার খুব সহজেই। এটি আপনার ত্বকের লাভন্য, জয়েন্ট এবং হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি প্রদানের জন্য একটি প্রাকৃতিক সেরা খাদ্য সম্পূরক হিসেবে কাজ করবে।
বাড়িতে কোলাজেন পাউডার তৈরি করার জন্য পশুর হাড়, চামড়া বা মাছের আঁশের মতো প্রাকৃতিক আরো কিছু উৎস জোগাড় করতে হবে, যার সাথে কোলাজেন পাউডার বানানোর প্রক্রিয়া জড়িত। এইভাবে ঘরে বসে কোলাজেন পাউডার তৈরি করতে পারলে। আপনার প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক কোলাজেন প্রোটিন অল্প খরচে গ্রহণ করার সুযোগ হবে।
কিভাবে ঘরে বসে কোলাজেন পাউডার বানাবেন?
![সবচেয়ে ভালো কোলাজেন পাউডার কোথায় পাওয়া যায়? সেরা কোলাজেন পাউডার বানানোর নিয়ম](https://pharmacyseba.com/wp-content/uploads/2023/11/Collagen-Peptides-Powder-_20231121_041123_0000-733x458.webp)
কোলাজেন পাউডার বানানোর পদ্ধতিগুলো নিম্নে আমরা ধাপে ধাপে উল্লেখ করব। তাই পদক্ষেপগুলো ভালোভাবে লক্ষ করুন। এবং হুবহু নির্দেশাবলী মেনে সহজে তৈরি করুন আপনার Cheap Collagen Peptides Powder.
ঘরে বসে কোলাজেন বানানোর প্রধান উপকরণ গুলো হলো।
- কোলাজেনের প্রাকৃতিক সোর্স, গরুর হাড়, মুরগীর হাড়, মাছের আঁশ, চামড়া, বা হাড়।
- পিওর ভিনেগার
- পরিমাণ মত পানি
আরও পড়ুনঃ রয়েল কি ও রয়েল জেলির উপকারিতা সমূহ।
কোলাজেন পাউডার বানানোর নিয়ম বা পদক্ষেপগুলো।
1. প্রাকৃতিক কোলাজেন সোর্সকে প্রস্তুত করুন।
আপনি যদি কোলাজেন তৈরির জন্য হাড় ব্যবহার করেন। তাহলে কানেন্টিভ টিস্যু সমৃদ্ধ ৪৫০ থেকে ৯০০ গ্রাম হাড় নিন। এবং সেগুলোকে 350°F (180°C) এ আনুমানিক 30 মিনিটের মত চুলায় ভাজুন। এটি উচ্চ মানের কোলাজিন তৈরি করতে ও কোলাজেনের স্বাদ বাড়াতে সাহায্য করবে। আর যদি Marine Collagen তৈরিতে মাছের আঁশ, হাড় বা চামড়া ব্যবহার করেন। তাহলে সেগুলোকে ভালোভাবে পরিস্কার করে নিন, এবং আঁশমুক্ত করুন।
2. উপকরণ গুলোকে ভালোভাবে মিশ্রণ করুন।
হাড় বা কোলাজেনের অন্য উৎসকে একটি বড় পাত্রে নিন। এবং তাতে পরিমাণ মত পানি দিয়ে দুই চামচ পরিমাণ ভিনেগার মিশিয়ে নিন। এই ভিনেগার হাড়গুলো থেকে খনিজ পদার্থগুলো বের করতে সাহায্য করবে। এবং আপনার কোলাজেন পাউডার এর মান বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।
3. এবং অল্প আঁচে ৪-৬ ঘন্টা রান্না করুন।
কোলাজেন তৈরির উপকরণগুলো ভালোভাবে মিশ্রণ করার পর। আলাদা একটি পাত্রে নিয়ে অল্প আঁচে সেগুলোকে রান্না করুন। এবং কমপক্ষে সেগুলোকে ৪ থেকে ৬ ঘন্টা পর্যন্ত অল্প আঁচে রান্না করতে থাকুন। পানি শুকিয়ে আসলে পুনরায় গরম পানি দিয়ে ঝাল খরুন। এর চেয়ে লম্বা সময় দিয়েও আপনি সেগুলোকে রান্না করতে পারেন। কারণ আপনি যত বেশি সময় ধরে অল্প আঁচে সেগুলোকে রান্না করবেন। কোলাজেন পাউডারের গুণাগুণ তত বেশি বৃদ্ধি পাবে।
4. রান্নার সময় উঠে আসা ফোম ও ময়লা ফেলে দিন।
রান্না করার সময় আপনার পাতিলের উপর উঠে আসা ফোম ও ময়লা দেখলে কিছুক্ষণ পর পর তা চামচ দিয়ে পৃথক করে ফেলে দিন।
5. রান্না শেষে গাঢ় লিকুইড ছেঁকে হাড় থেকে পৃথক করে নিন।
চার থেকে ছয় ঘন্টা রান্নার পর যখন হাড়গুলো থেকে কোলাজেন বের হয়ে আসে। এবং পানিগুলো একদম গাঢ় হয়ে যায়, তখন পানিকে ভালোভাবে ছেঁকে হাড়গুলো বা কোলাজেন তৈরির জন্য ব্যবহৃত অন্য উৎসগুলোকে আলাদা করে নিন।
পরিষ্কার তরল নিশ্চিত করতে একটি সূক্ষ্ম-জাল ছাঁকনি বা জালি কাপড় ব্যবহার করুন।
6. লিকুইড গুলোকে ঠান্ডা করে নিন তারপর ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন।
কোলাজেন লিকুইড গুলোকে ঘরের তাপমাত্রায় রেখে ঠান্ডা করে নিন। এরপর সেগুলোকে এক রাতের জন্য নরমাল ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখুন। দেখবেন ঠান্ডা হওয়ার পর এগুলো আস্তে আস্তে নরম ও আঠালো আঠালো হয়ে উঠবে।
7. এক রাত পর জমে থাকা শক্ত চর্বি ফেলে দিন।
ফ্রিজে এক রাত সংস্করণ করার পর, বের করে যদি কোন শক্ত চর্বি লিকুইডের উপর স্তরে দেখেন। তাহলে ঐ শক্ত চর্বিটি ফেলে দিন।
8. লিকুইড থেকে পানি শুকিয়ে নিন (dehydrate or Air dry)
কোলাজেন সমৃদ্ধ লিকুইড গুলো একটি বেকিং শীটে বা ডিসাইডরেটর ট্রেইতে দিয়ে কম তাপমাত্রা 140°F অথবা 60°C এ শুকিয়ে নিন। এবং একদম শুকনো ও ভঙ্গুর শীট তৈরি হওয়া পর্যন্ত লিকুইড গুলোকে শুকাতে থাকুন।
9. শুকনো কোলাজেন শীটকে ভেঙ্গে কোলাজেন পাউডার বানিয়ে নিন।
![কোলাজেন পাউডার কি ও কোলাজেন পাউডারের কাজ কি? কোলাজেন পাউডার (Collagen Peptides) কি এবং তার কাজ কি?](https://pharmacyseba.com/wp-content/uploads/2023/11/Collagen-Peptides-Powder-_20231121_041045_0000-733x458.webp)
শুকনো Collagen শীট তৈরি হওয়ার পর সেগুলোকে ছোট ছোট টুকরো করে নিন। এবং কফি ভাঙ্গার মেশিনে ছোট টুকরোগুলোকে সূক্ষ মিহি গুঁড়ো করে নিন। ব্যাস এতেই হয়ে যাবে আপনার ঘরে তৈরীকৃত বাজারের সেরা কোলাজেন পাউডার এর চেয়েও বেশি ভালো ও প্রাকৃতিক কোলাজেন পাউডার।
10. আপনার Collagen Powder কে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করুন।
আপনার ঘরে তৈরি করা ভালো কোলাজেন আর্দ্রতা থেকে দূরে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় বা 25C° এর নিচে ঠান্ডা স্থানে রাখুন। এবং একটি বায়ুরোধী পাত্রে তা সংরক্ষণ করুন।
আমাদের দেয়া রেসিপি ও সবচেয়ে ভালো কোলাজেন তৈরির নিয়ম যদি আপনার ভালো লাগে। এবং রেসিপিটি আপনি নিজে ঘরে ট্রাই করার পর কেমন লেগেছে সেই অনুভূতি আমাদের কমেন্ট বক্সে মতামত প্রকাশ করে জানাবেন।
ধন্যবাদ আমাদের ফার্মেসি সেবার সাথে থাকার জন্য। নতুন নতুন আরো অনেক বেশি স্বাস্থ্য ও বিউটি কেয়ার টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজ ফলো করতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ চেহারার সৌন্দর্য্য বৃদ্ধিতে ও চুলের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা