ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ কারী সেরা ৩ টি খাদ্য ও পানীয়

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সহায়ক সেরা ৩ টি প্রাকৃতিক খাবার ও পানীয়

"ADVERTISEMENT"

আপনি জানেন যে, আমাদের খাদ্যাভ্যাস ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যই আমাদের সু-স্বাস্থ্যের জন্য প্রধান ভূমিকা পালন করে। তাই ডায়াবেটিস ও অন্যান্য রোগ নিয়ন্ত্রণ ও আরোগ্য লাভ করার ক্ষেত্রে আমাদেরকে অবশ্যই ভালো ও সবুজ খাবার খাদ্য তালিকাভুক্ত করতে হবে। কারণ রক্তে উচ্চ মাত্রার শর্করা থাকলে আমাদের ডায়াবেটিস ও কার্ডিওভাসকুলার বা হার্ট অ্যাটাক ও হাই ব্লাড প্রেসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ফলে এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে ও প্রতিকার করতে আল্লাহর দেয়া প্রাকৃতিক কিছু শর্করা নিয়ন্ত্রণকারী সবুজ ৩ টি খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করুন, যেগুলো আমাদেরকে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ কারী সেরা ৩ টি প্রাকৃতিক খাদ্য ও পানীয়

1. করলা বা Bitter Melon প্রাকৃতিকভাবে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণকারী সবুজ সবজি

করলা এর বৈজ্ঞানিক নাম হলো, Momordica charantia বা Bitter Melon. যেটি ঐতিহ্যগতভাবে ঔষধ ও স্বাস্থ্যকর খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশেষ করে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করার বৈশিষ্ট্য থাকায়। এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সহায়ক হিসেবে সবার কাছে খুব প্রিয়। এশিয়া মহাদেশে, বিশেষ করে বাংলাদেশ ,ভারত ও নেপালের মানুষদের কাছে এটি একটি অনন্য সাধের সাধারণ সবুজ সবজি। যা তারা শীতকালীন সবজি হিসেবে প্রায়শই প্রতিদিনের খাবারের তালিকাভুক্ত রাখেন।

কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে এই করলা বা Bitter Melon এক অনন্য স্বাস্থ্য উপকারি বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ খাবার। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন C, বিটা কেরোটিন (Beta-carotene), ভিটামিন A, ও ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বৃদ্ধি কারী প্রোপার্টিজ। যেগুলো আপনার রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিস ভালো করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, চোখের স্বাস্থ্য উন্নত করে ও চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি করে, টিনিজারদের স্বাস্থ্য উন্নতি ও মেধা বিকাশে উত্তম ভূমিকা রাখে। এমনকি এটি আপনার চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার জন্যেও অনেক ভালো চিকিৎসা হতে পারে।

একটি স্বাস্থ্য গবেষণায় (Journal of Ethnopharmacology) দেখানো হয়েছে যে, করলা বা বিটার মেলন টাইপ 2 ডায়াবেটিস রোগীদের ফাস্টিং ব্লাড সুগার অনেক কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়। এবং কিছু রোগীদের উপর চালানো ট্রায়ালে দেখা যায় যে, করালার ধারাবাহিক ব্যবহার ডায়াবেটিস রোগীদের ডায়াবেটিস শুধু ঔষধ ব্যবহারকারী অন্যান্য রোগীদের তুনলায় দ্রুত নিয়ন্ত্রণ ও কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়। তথ্যসূত্রঃ

2. পালংশাক, রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণক সুপারফুড

পালংশাক হলো পুষ্টি গুণে পরিপূর্ণ এক সবুজ পাতা বিশিষ্ট সবজি, যেটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি সুপার ফুড হিসেবে সকলের কাছে সু-পরিচিত। কারণ এটি খুব কম ক্যালোরিযুক্ত এবং অনেক বেশি পরিমাণ Fiber ও Magnesium থাকায় রক্তনালী কর্তৃক শরীরে চিনি ও কার্বোহাইড্রেট চোষণ কমিয়ে দেয়। এবং রক্তে শর্করার বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখে।

ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন ডায়াবেটিস কেয়ার কর্তৃক প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে। যে, ভালো পরিমাণ Magnesium গ্রহণের মাধ্যমে টাইপ 2 ডায়াবেটিস এর ঝুঁকি অনেকাংশেই কমিয়ে আনা যায়। সুতরাং পালংশাকে যেহেতু প্রচুর পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম থাকে। তাই আপনার খাবারের তালিকায় পালংশাক যোগ করে ভালো পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ করতে পারেন। এবং টাইপ 2 ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন ও এই রোগের ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারেন।

"ADVERTISEMENT"

এমনকি পালংশাকে রয়েছে alpha-lipoic acid সহ ভরপুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যেটি আপনার ইনসুলিন সেনসিভিটি বা সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে। এবং Oxidative Stress ও metabolic syndrome কমিয়ে আপনার ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণ করে। এবং দীর্ঘ ব্যবহারে এটি আপনার ডায়াবেটিসকে ভালো করার জন্য কারণ হতে পারে।

পালংশাকে আপনি সবজি হিসেবে রান্না করে, ভাজি করে কিংবা সালাদ বানিয়েও খেতে পারেন।

জ্ঞাতব্যঃ তবে এই সকল অর্গানিক খাদ্য গ্রহণ করার সময় আপনার ডায়াবেটিস চেক করুন। এবং আপনার ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ডায়াবেটিসের ঔষধগুলো নিয়মিত সেবন করুন। রোগের অবস্থার উন্নতি হলে ডাক্তারের সরনাপন্ব হয়ে যদি ঔষধের ডোজ কম করার পরামর্শ পাওয়া যায়। তাহলে সেই মোতাবেক চলুন এবং এই প্রাকৃতিক খাবারগুলো গ্রহণ করতে থাকুন।

আরও পড়ুনঃ কোলাজেন সাপ্লিমেন্টের সেরা ১০ টি উপকারিতা ও সেরা কোলাজেন পাউডার।

3. গ্রিন টি (Green Tea) রক্তে শর্করার ভারসাম্য ঠিক রাখার জন্য ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এক অমৃত পানীয়

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ কারী সেরা ৩ টি খাদ্য ও পানীয়
Best 3 Healthy Drinks for Diabetic Patients Explained in Bengali

গ্রিন টি (Green Tea) বর্তমান সময়ে সহজলভ্য ওজন কমানোর প্রধান উপাদান হিসেবে খুবই জনপ্রিয় একটি পানীয় ও সাপ্লিমেন্ট। এবং এর অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে, বিশেষ করে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্যও এটি বেশ উপকারিতা। এমনকি এটি তার সু-স্বাদুর সুনামে যুগ যুগ ধরে ঐতিহ্যগত পানীয় হিসেবে সকলের আড্ডার পানীয়ের তালিকাভুক্ত রয়েছে। কারণ এর ঔষধি গুণাগুণ আমাদের সার্বিক সু-স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।

গ্রিন টি (Green Tea) এর উপকারিতার মধ্যে রয়েছে, আপনার রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রধান ভূমিকা রাখা। কারণ গ্রিন চা তে থাকা EGCG এর ডায়াবেটিস প্রতিরোধক বৈশিষ্ট্যের জন্য ব্যাপকভাবে অধ্যায়ন করার পর বলা হয়। যে, গ্রিন টি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে, শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায় এবং গ্লুকোজ মেটাবলিসম বৃদ্ধি করে।

গবেষণায় বলা হয় যে, Green Tea তে থাকা Catechins আপনার শরীরের কার্বোহাইড্রেট জন্য দায়ী এনজাইমের দায়িত্ব পালনে বাধা দিতে পারে। যা আপনার রক্ত নালীতে সুগারকে আস্তে আস্তে রিলিজ করবে। এবং ডায়াবেটিস ও কার্ডিওভাসকুলার রোগ থেকে আপনাকে সুরক্ষা করবে।

সতর্কতাঃ

উপরোক্ত প্রবন্ধটি দেয়া তথ্য দ্বারা শুধুমাত্র তথ্যগত জ্ঞান বন্টন উদ্দেশ্য। এটিকে সিরিয়াস চিকিৎসা পরামর্শ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত নয়। আপনার ডায়েট বা চিকিৎসাগত পরিকল্পনায় কোনও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন করার আগে একজন ডাক্তার বা স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সাথে পরামর্শ করুন। বিশেষ করে যদি আপনার পূর্ব থেকে কোন রোগ বা স্বাস্থ্যগত অবস্থা ত্রুটি থাকে বা ক্রোনিক ডিজিজের কোন ওষুধ সেবন করেন।

আরও পড়ুনঃ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করার উপায় ও প্রাকৃতিকভাবে কোলেস্টেরল থেকে চিরতরে মুক্তির উপায়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shopping Cart