Overview: Hirsutism (হিরসুটিজম) বা অবাঞ্ছিত লোম। নারীর শরীরে অবাঞ্ছিত চুল বৃদ্ধি রোগ হলো এমন এক শারীরিক কন্ডিশান যেখানে মহিলাদের মুখ, ঘাড়, বুক, পেট, পিঠের নীচ, নিতম্ব বা উরুতে ঘন কালো অবাঞ্ছিত লোম থাকে। আপনি যদি শরীরে এমন অতিরিক্ত চুল উঠতে দেখেন।তাহলে দ্রুত DHEA টেস্ট করুন।
যাতে করে অবাঞ্ছিত লোম বৃদ্ধির মুল কারণ জানতে পারেন, এবং সঠিক চিকিৎসায় এই অস্বস্তিকর কন্ডিশান থেকে বের হতে পারেন। Hirsutism হলে ভয়ের কোন কারণ নেই, এটি খুব সহজ কিছু পদ্ধতি অনুসরণে ভালো করা যায়। যেগুলো আমরা নিম্নে বিস্তারিত উল্লেখ করব। তথ্যসূত্রঃ
Causes of hirsutism in Women বা নারীর শরীরে অবাঞ্ছিত লোম বৃদ্ধির কারণ সমূহ
হিরসুটিজম বা নারীদের শরীরে অবাঞ্ছিত চুল বৃদ্ধির সম্ভাব্য কারণগুলো হতে পারে: এই,
- হরমোনের পরিবর্তন তথা পুরুষালী হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে নারীদের হিরসুটিজম হতে পারে।
- পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (PCOS) এর কারণে।
- Anabolic Steroids ঔষধ এর ব্যবহারে।
- Cushingʼs Syndrome বা cortisol নামক hormone এর অতিরিক্ত পরিমাণ বৃদ্ধিতে।
- Acromegaly থাকা বা শরীরে টিস্যু ও হাড়ের দ্রুত বৃদ্ধির জন্য শরীর কর্তৃক Growth hormone বৃদ্ধির কারণে।
- এমন কোথাও টিউমার হলে, যেখানে নারীর হরমোন এফেক্টেড হয়।
- নির্দিষ্ট কিছু ঔষধের ব্যবহার। certain medicines
হিরসুটিজম বা নারীদের শরীরে অবাঞ্ছিত চুল বৃদ্ধির সাথে এন্ড্রোজেন নামক হরমোনের সংযুক্ততা রয়েছে। নারীদের মধ্যে এই হরমোনের মাত্রা বেড়ে গেলে বা তাদের শরীর এই হরমোনের প্রতি বেশি সংবেদনশীল হয়ে পড়লে এই হিরসুটিজম হতে পারে।
এই রোগের সবচেয়ে সাধারণ কারণ হল পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (PCOS)। এটি এমন এক অবস্থা যা ডিম্বাশয়কে প্রভাবিত করে, ব্রণ এবং অনিয়মিত পিরিয়ডের মতো উপসর্গও সৃষ্টি করে।
জ্ঞাতব্যঃ আপনার যদি মুখ বা শরীরে হালকা ও সূক্ষ্ম চুল থাকে। এতে ভয়ের কিছু নেই কারণ এটি হিরসুটিজম নয়। সাধারণত বেশিরভাগ মহিলারা বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই ধরণের চুল বৃদ্ধি পেতে দেখেন। বিশেষ করে মেনোপজ বা প্রথম ঋতুস্রাবের পরে। এই সকল স্থানে চুল একটু বৃদ্ধি পায় যেটি স্বাভাবিক ও হিরসুটিজম নয়।
আরও পড়ুনঃ করাত Palmetto এর উপকারিতা, ব্যবহার বিধি ও প্বার্শ প্রতিক্রিয়া
Hirsutism বা নারীর শরীরে অবাঞ্ছিত চুল বৃদ্ধি হলে করনীয় ও চিকিৎসা।
আপনার যদি hirsutism বা শরীরে অতিরিক্ত অবাঞ্ছিত চুল থাকে। তাহলে আপনার ডাক্তার হয়তো অস্তিত্বকর অতিরিক্ত ও অবাঞ্ছিত মোটা লোমগুলো কমিয়ে আনতে নিম্নোক্ত চিকিৎসা ও কাজগুলো করতে বলতে পারেন।
- আপনার যদি অতিরিক্ত ওজন থাকে। তাহলে তা কমানোর চেষ্টা করুন, কারণ অতিরিক্ত ওজন কমানোর ফলে আপনার হরমোনের লেভেল কন্ট্রোলে থাকবে। এবং অতিরিক্ত হরমোনের ফলে শরীরে যেই অবাঞ্ছিত লোমের বৃদ্ধি পেয়েছে, তা ধীরে ধীরে কমতে থাকবে।
- ডাক্তার প্রেসক্রাইব করলে eflornithine জাতীয় cream ব্যবহার করুন। কারণ এটি আপনার চেহারায় চুলের বৃদ্ধি ও অগ্রগতিকে কমিয়ে দেয়।
- বাড়িতে বসে অবাঞ্ছিত চুল কমাতে আপনি এই কাজগুলো করতে পারেন। যেমনঃ ওয়াক্সিং করতে পারেন, মুণ্ডন করতে পারেন, উপড়ে তুলতে পারেন, বা হেয়ার রিমুভাল ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।
- contraceptive বা জন্ম নিয়ন্ত্রক ঔষধ ব্যবহার করতে পারেন। যদি এখনও আপনার ঋতুস্রাব শুরু না হয়ে থাকে। কারণ জন্ম নিয়ন্ত্রক ঔষধ হরমোনকে ব্যালান্স করতে পারে। সতর্কতাঃ এই ঔষধগুলো আপনার ডাক্তার বা ফার্মাসিস্ট এর পরামর্শ ছাড়া গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন।
এই পদ্ধতিগুলো যদি 6 মাস পরেও আপনাকে সাহায্য না করে। তাহলে আপনার প্রাথমিক চিকিৎসক আপনাকে একজন বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠাতে পারেন। তারা আপনার হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্যান্য ওষুধের সুপারিশ করতে পারেন।
স্থায়ীভাবে নারীদের শরীরের ও মুখের অবাঞ্ছিত লোম দূর করার সহজ উপায়
দীর্ঘ সময়ের জন্য নারীদের শরীরের অবাঞ্ছিত লোম দূর করার সহজ উপায় হিসেবে নারীগণ নিম্নোক্ত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করতে পারেন।
- Laser treatment শরীর ও মুখে হেয়ার রিমুভিং লেজার চিকিৎসা করে।
- eflornithine জাতীয় cream ব্যবহার করে। (Prescription Required Medicine)
- contraceptive বা জন্ম নিয়ন্ত্রক ঔষধ ব্যবহার করে।
- অতিরিক্ত ওজন ও Obesity কমিয়ে হরমোনের ব্যালান্স করতে পারলে। মুখের অবাঞ্ছিত লোম দূর হয়ে যেতে পারে।
- Electrolysis ডাক্তার কর্তৃক বৈদ্যুতিক প্রবাহ ব্যবহার করে তাপ প্রয়োগের মাধ্যমে চুলের শিকড় (বা ত্বকের ছোট পোরস) থেকে চুল উঠিয়ে চুলের উত্থান স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া।
তবে উপরোক্ত পদ্ধতিগুলো স্থায়ীভাবে অবাঞ্ছিত লোম দূর করার জন্য কাজ নাও করতে পারে। কারণ এগুলো রোগীর কন্ডিশান ভেদে কাজ করে।
সতর্কতাঃ উপরোক্ত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করার পূর্বে আপনার ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন। এবং নিজেও এই চিকিৎসা গুলোর ব্যাপারে জ্ঞান অনুসন্ধান করুন।
আরও পড়ুনঃ ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা ও চুলের যত্নে তার ভূমিকা